পরমব্রহ্ম সচ্চিদানন্দ কে?

পরমব্রহ্ম সচ্চিদানন্দ কে?



পরমব্রহ্ম সচ্চিদানন্দ কে?

সচ্চিদানন্দ পরমব্রহ্ম পরমেশ্বর স্বরূপ, সৎ-চিৎ-আনন্দ অর্থাৎ নিত্য-জ্ঞান-আনন্দ স্বরূপ ব্রহ্ম পরমাত্মা রূপে নিত্য জ্ঞান সুখপূর্ণ হয়ে রয়েছেন।

                     পবিত্র বেদে ব্রহ্ম রূপে

রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব তদস্য রূপং প্রতিচক্ষণায় ৷
ইন্দ্রো মায়াভিঃ পুরুরূপ ঈয়তে যুক্তা হস্য হরয়াঃ শতা দশ ৷।
                       (ঋগ্বেদ, ৬/৪৭/১৮)

পদার্থঃ— (ইন্দ্রঃ) জীবাত্মা (রূপং-রূপং প্রতিরূপ
বভুব) প্রত্যেক প্রানির রূপে তদাকার হয়ে বিরাজমান
হন। (তত্ অস্য রূপং প্রতি চক্ষনায়) তাহা এই রূপে
আধাত্ম দৃষ্টি দ্বারা দেখায় যোগ্য। এই জীবাত্মা (সায়াভি) নানা বুদ্ধি দ্বারাই (পুরু-রূপঃ ইয়তে) নানা রূপের জানা যায়। (অস্য ইহার শাসনে, দেহ মধ্যেই (দশ শতা হরয়ঃ) দশ শত প্রানগন অশ্ব বা ভূত্যের সমান (যুক্তাঃ) যুক্ত জ্ঞান তন্তু তথা শক্তিতন্তু রূপে কাজ করে।

অনুবাদঃ— “রূপে রূপে প্রতিরূপ (তাহার অনুরূপ) হইয়াছেন, সেই ইহার রূপকে প্রতিখ্যাপনের (জ্ঞাপনের) জন্য ইন্দ্র মায়াসমূহের দ্বারা বহুরূপ প্রাপ্ত হন। যুক্ত আছে ইহার অশ্ব শত দশ (অর্থাৎ সহস্র)৷”
                           
                         জীব ব্রহ্ম প্রকৃতি

দ্বা সুপর্ণা সযুজা সখায়া সমানং বৃক্ষং পরিষস্বজাতে । তয়োরন্যং পিপ্পলং স্বাদ্বত্ত্যনশ্নঃন্যে৷ অভিচাক শীতি ॥
                      (ঋগ্বেদ, ১/১৬৪/২০)

পদার্থঃ— (দা) দুই (সুপর্ণা) সুন্দর পক্ষ বিশিষ্ট (সযুজা) সমান সম্বন্ধযুক্ত (সখায়া) মিত্রের সমান বর্তমান (সমানম) এক( বৃক্ষম) বৃক্ষের (পরি) সব দিকে (যস্বজাতে) আশ্রয় করিয়াছে (তয়োঃ) তাহাদের মধ্যে (অন্যঃ) | একটি (পিপ্পলম) পরিপক্ক ফলকে (স্বাদু ) স্বাদের জন্য (অত্তি) খায় (অনশ্নন) না খাইয়া (অন্যঃ) অপরটা (অভি, চাকশীতি) সব দিকে দেখিতে থাকে।

বঙ্গানুবাদঃ— সুন্দর পক্ষবিশিষ্ট সম সগন্ধযুক্ত দুইটা পক্ষী মিত্র রূপে একই বৃক্ষ আশ্রয় করিয়া আছে। তাহাদের মধ্যে একটি বৃক্ষের ফলকে স্বাদের জন্য ভক্ষণ করে এবং অন্যটা ফলকে ভক্ষণ না করিয়া সব দিক দেখিতেছে।

ভাবার্থঃ— বৃক্ষটা জগৎ এবং দুইটী পক্ষীর একটী জীব, অন্যটি ব্রহ্ম। জীব ও ব্রহ্ম উভয়ই অনাদি। উভয়ই সখা স্বরূপ। জীব সংসারে পাপ পুণ্যের ফলভোগ করে এবং ব্রহ্ম ফল ভােগ না করিয়া সাক্ষী রূপে বর্তমান।

                              সচ্চিদানন্দ
                     (নিত্য + জ্ঞান + সুখপূর্ণ)
                          (সৎ-চিৎ-আনন্দ)

পরমপুরুষ সৎ-চিৎ-আনন্দ স্বরূপ জীবাত্মা সৎ-চিৎ-স্বরূপ প্রকৃতি সৎ স্বরূপ। আত্মাতে দুইগুণ সৎ-নাশ রহিত আর চিৎ-জ্ঞান সহিত। প্রকৃতিতে জ্ঞান এবং চেতনার অভাব আছে। অতএব যদি জীবাত্মা উন্নতি করতে চায় তবে আনন্দের মহাভান্ডার সচ্চিদানন্দকে উপাসনার দ্বারাই দুঃখকে এড়িয়ে আনন্দকে পেয়ে
মনুষ্য জন্ম সফল করা যায়। জ্ঞান রহিত, চেতনা রহিত মুর্তি যার কেবল জড়গুণ উহার উপাসনা করে জীবাত্মার উন্নতি করার পরিবর্তে অবনতি হয়ে জড়প্রাপ্ত হয়।

ভগবান কে শাস্ত্রে বহুবার সচ্চিদানন্দ বলা হয়েছে, এর পুরো অর্থ কি শাস্ত্রে কি বলা হয়েছে— সৎ, চিৎ ও আন্দনময় = সচ্চিদানন্দ এই তিন ভাব অর্থে মিলে আছে এক ব্রহ্মশক্তি।

নিচের উল্লেখ করা হয়েছে—

                        সৎ—চিৎ—আনন্দ

সত্যই সৃজনশীল শক্তি বা বিশুদ্ধ চেতনা যা কখনও পরিবর্তন হয় না। সত্য যে পরিবর্তন না, সত্য, পরম হচ্ছে। চিত্ত চেতনা, আনন্দ আনন্দ, পরম আনন্দ, চেতনা অস্তিত্ব আশীর্বাদ।

বৈদিক যুগে আদ্যাশক্তির কথা আমরা পাই (কেন উপনিষদে) সেখানে তিনি জ্যোতিঃস্বরূপ সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মকে দেবতাদের বুঝিয়েছেন। করুণাময়ী জননী মূর্তিতে ইন্দ্রাদি দেবতাদের অহংকার নাশ করে তাদের ব্রহ্মজ্ঞান তত্ত্ব উপলব্ধিতে সাহায্য করেছেন। অহংকারই জীবের অজ্ঞানের কারণ এই অহং নাশ হলে তবেই তত্ত্বোপলব্ধি হয়। আর আদি সৃষ্টির কৃপা হইতে দেবসন্তানদের সেই অহং নাশ হয়ে ব্রহ্ম সম্পর্কে ধারণা জন্মায়।

                                  সৎ

বেনস্তৎপশ্যন্নিহিতং গুহা সদ্যত্র বিশ্বং ভবত্যেকনীডম্।
তস্মিন্নিদং সং চ বিচৈতি সর্বং স ওতঃ প্রোতশ্ব বিভূঃ প্রজাসু।।
                        (যজুর্বেদ, ৩২/৮)

বঙ্গানুবাদঃ- যাহাতে সর্বজগৎ আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে সেই বুদ্ধিগম্য চেতন ব্রহ্মকে মেধাবী পুরুষ জ্ঞান দৃষ্টিতে দর্শন করেন। সর্ব্ব জগৎ প্রলয়কালে তাঁহাতে সূক্ষ্মরূপে মিলিত হয় এবং উৎপত্তিকালে পৃথক স্থুলরুপে পরিণত হয়। সেই সত্যস্বরুপ পরমাত্মা জীব ও প্রকৃতিতে ওতঃপ্রোতঃ ভাবে ব্যপক রহিয়াছেন।

                                   চিৎ

নিকাব্যা বেধসঃ শশ্বতস্কর্হস্তে দধানো নর্য্যা পুরূনি।
অগ্নির্ভূবদ্রয়ি পতী রয়ীনাং সত্রা চক্রাণো অমৃতানি বিশ্বা।।
                     (ঋগ্বেদ, ১/৭২/১)

অনুবাদ অর্থঃ— যে বিদ্বান, পুরুষ, সর্ববিদ্যার ধারণকর্তা অনাদি স্বরুপ পরমেশ্বর কৃর্তৃক প্রকাশিত, নানাবিধ সত্যার্থের প্রকাশক, মোক্ষদাতা ও মনুষ্যের সুখের মূল জ্ঞানরাশিকে প্রত্যক্ষ পদার্থের ন্যায় হস্তে ধারণ করিয়া কৃত ধর্মাচরণকে নিশ্চিতরূপে সিদ্ধ করেন তিনি অনন্ত বিদ্যাধনৈশ্বর্য্যকে রক্ষা করেন এবং অনন্ত শোভা সৌন্দর্য্যকে ধারণ করেন।

                                 আনন্দ

আনন্দা মোদা প্রমুদোহভীমোদ মুদশ্চ যে।
উচ্ছিষ্টাজ্জঞ্জিরে সর্বে দিবিদেবা দিবিশ্রিত।।
                 (অথর্ববেদ, ১১/৭/২৬)

অনুবাদ অর্থঃ— জীবাত্মার মোক্ষ-সুখ, বিষয়-সুখ, পরমানন্দ এবং জ্ঞানাশ্রিত আনন্দ—এ সকল পরমাত্মা হইতেই নিঃসৃত হয়।

আনন্দ- কস্ত্বা সত্যো মদানাং ম হিষ্টো মৎসদন্ধসঃ।
দৃঢ়া চিদারুজে বসু।।
                        (যজুর্বেদ, ৩৬/৫)

অনুবাদ অর্থঃ— হে মনুষ্য! আনন্দসমূহের মধ্যে যিনি সর্বমশ্রেষ্ঠ ও সুখ স্বরুপ, যিনি অবিনশ্বর, তিনি তোমাকে অন্নাদি পদার্থ দ্বারা আনন্দ দান করেন এবং দ্রোহশূন্য জীবকে শাশ্বত ধন প্রদান করেন।

                          সচ্চিদানন্দ কে?

সৎ, চিৎ ও আনন্দ এই তিন-এর সমন্বয় সচ্চিদানন্দ। সৎ হলো সৃজন শক্তি বা বিশুদ্ধ চেতনা যা কখনো পরিবর্তন হয় না, শাস্ত্র একেই বলে সৎ।

Sat is that never changes, Truth, Absolute Being.
চিৎ হলো পরিচালিকা শক্তি বা আত্মা সচেতনতা বা চৈতন্য।

Chit is consciousness.
আর আনন্দ হলো নিশ্বার্থ ভালো লাগা, প্রাপ্তি ভিন্ন ভালো লাগা৷
Ananda is bliss, the Absolute Bliss .
তার মানে ভগবাণ আমাদের চেতনায় ধরা দেন এই রূপে।
consciousness existence bless.
   
                           সম্পুর্ণ বিষয়

Honest is the creative power or pure consciousness that never changes. Sat is that never changes, Truth, Absolute Being. Chit is consciousness. Ananda is bliss, the Absolute Bliss. consciousness existence bless.

        (সত্য যে পরিবর্তন না, সত্য, পরম হচ্ছে)
চিৎ হলো পরিচালিকা শক্তি বা আত্মা সচেতনতা বা চৈতন্য।
                           (চিত্ত চেতনা)
আর আনন্দ হলো নিশ্বার্থ ভালো লাগা , প্রাপ্তি ভিন্ন ভালো লাগা৷

                (আনন্দ আনন্দ, পরম আনন্দ)
তার মানে ভগবান আমাদের চেতনায় ধরা দেন এই রূপে চেতনা অস্তিত্ব আশীর্বাদ।

ওঁ শান্তি ওঁ শান্তি ওঁ শান্তি!



জয় শ্রীরাম

হর হর মহাদেব

SVS
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মী
শ্রী বাবলু মালাকার
              
নবীনতর পূর্বতন